সীমিত পরিসরে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে বঙ্গভবন। মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে বঙ্গভবনে সংস্কারকৃত এয়ার রেইড শেল্টার ও তোষাখানা জাদুঘরের উদ্বোধনকালে এ কথা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
উদ্বোধনের পর এটি পরিদর্শনে দর্শনার্থীদের বঙ্গভবনে প্রবেশের সুযোগ থাকার কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, বঙ্গভবনের ভেতরে সাধারণত মানুষ আসতে পারে না। এটার ভেতরে কী আছে, না আছে কিছুই তো জানে না। সুতরাং বঙ্গভবন সম্পর্কে কিছুটা মানুষ জানুক।
বঙ্গভবনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, শতাব্দীকালের বর্ণাঢ্য ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অন্যতম নিদর্শন বঙ্গভবন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, তোশাখানা জাদুঘর বঙ্গভবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বঙ্গভবনের সমৃদ্ধ ইতিহাস সংরক্ষণ এবং তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে বঙ্গভবন তোশাখানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।
আবদুল হামিদ বলেন, বিদেশি রাষ্ট্রদূতসহ আগন্তুকরা পরিদর্শনকালে আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হতে সক্ষম হবেন।
রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, বঙ্গভবনের অনেক স্থাপনা দেখে মোটামুটিভাবে তারাও আকৃষ্ট হবেন এবং আমাদের বাংলাদেশ সম্পর্কে তাদের মনোভাব অনেক উঁচু হবে বলে আমার বিশ্বাস।
বঙ্গভবনের ভেতরে দানা দিঘি, সিংহপুকুর ও পদ্মপুকুর নামে তিনটি পুকুর আছে। এ তিনটি পুকুরও সংস্কার করা হয়েছে। এসব পুকুরও দেখার সুযোগ পাবেন দর্শনার্থীরা। এছাড়া বঙ্গভবনের ভেতরে একটি পুরোনো ঐতিহাসিক মার্সেডিজ গাড়ির প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
নবনির্মিত স্থাপনাগুলো বঙ্গভবনের ভেতরে হলেও রাষ্ট্রপতির অফিস ও বাসভবন থেকে কিছুটা দূরে। মূলত এই অংশটিতে দর্শনার্থীরা প্রবেশের সুযোগ পাবেন। নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে রাষ্ট্রপতির অফিস ও বাসভবন দেখার সুযোগ থাকছে না দর্শনার্থীদের।
এ সময় রাষ্ট্রপতির সহধর্মিনী রাশিদা খানম, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিকসহ সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
১৯০৫ থেকে ১৯১১ সালে তৎকালীন পূর্ববঙ্গ-আসাম প্রদেশের শাসনকর্তার (লেফটেন্যান্ট গভর্নমেন্ট) কার্যালয় ও বাসভবন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ঐতিহাসিক দিলখুশা গভর্নমেন্ট হাউস।
বিমান হামলা থেকে রাষ্ট্রপতিকে রক্ষার জন্য ১৯৬৫ সালে নির্মাণ করা হয় এয়ার রেইড শেল্টার। দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত এ শেল্টার ভবনটিকে নতুন করে সাজানো হয়েছে।
১৯৭১ সালের ২৩ ডিসেম্বর স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির অফিস ও বাসভবন হিসেবে যাত্রা শুরু করে এবং এ সময় নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘বঙ্গভবন’।
গত এক বছর আগে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বহু বছরের জরাজীর্ণ তোশাখানা জাদুঘর এবং এয়ার রেইড শেল্টার বিশেষ আধুনিক নান্দনিকতায় গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন।
সময়বিডিটোয়েন্টিফোর.কম/শুব্রা রায়