‘আর কান্না নয়, বর্তমান সরকারের হাত থেকে দেশ রক্ষার্থে সবাইকে জেগে ওঠার আহ্বান’ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এই নির্যাতনকারী সরকারের হাত থেকে জাতিকে মুক্ত করতে হবে। শান্তিপূর্ণ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে ছাত্রদল নেতা নূরে আলম হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার কথাও বলেন তিনি।
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ভোলা জেলা ছাত্রদল সভাপতি নূরে আলমের নামাজে জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আজ বৃহস্পতিবার (০৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। নুরে আলমের জানাজায় দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা অংশ নেন এবং নিহত ছাত্রদল নেতার মরদেহে ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক, কৃষক দলসহ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এদিন দুপুর ১টায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন এবং দলের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে নূরে আলমের মরদেহ নয়াপল্টনে নিয়ে আসেন। জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের মাওলানা নেছারুল হক জানাজার নামাজ পড়ান ও দোয়া পরিচালনা করেন। এসময় নেতাকর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করে জানাজায় অংশ নেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পিতার কাঁধে পুত্রের লাশ। এর চেয়ে বেদনার, যন্ত্রণার আর কিছু নাই। আমাদের ছেলে নুরে আলমকে গুলি করে হত্যা করেছে এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পুলিশ বাহিনী। গুলি করে হত্যা করেছে ভোলা সদর উপজেলার স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আব্দুর রহিমকে। আরও ১৯ জন ঢাকা ও বরিশালে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। আজকে নতুন নয়, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর একদলীয় শাসন পোক্ত করতে ১৫ বছর ধরে আমাদের ছয় শ’ নেতাকর্মীকে গুম করেছে। ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে’।
তিনি আরও বলেন, আগামী ৫, ৬ ও ৭ আগস্ট এই তিন দিন সারাদেশে শোক পালনসহ ৬, ৭ ও ৮ আগস্ট ছাত্রদল, কৃষকদল ও যুবদলের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব। শোক পালনকালে বিএনপি সারাদেশে দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখবে এবং কালো পতাকা উত্তোলন করবে।
নয়াপল্টনের জানাজায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, কৃষক দল সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদল সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ অংশ নেন। এছাড়া গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, এলডিপি একাংশের মহাসচিব ড. রেদওয়ান আহমেদ, এনপিপির ড.ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, ন্যাপ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজারুল ইসলাম, এনডিপির কারী আবু তাহের, ডেমোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন মনিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরাও জানাজায় অংশ নেন।
উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই সারাদেশে লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে বিএনপির কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ভোলায় বিক্ষোভ পালনকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হন ভোলা জেলা ছাত্রদল সভাপতি নূরে আলম। পরে তাকে রাজধানীর গ্রিনরোডে কমফোর্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার (৩ আগস্ট) তিনি মারা যান।
সময়বিডি২৪.কম/সুজন খান