শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমাদের নতুন শিক্ষাক্রমের মূল ভিত্তি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। এর ওপরে ভিত্তি করে যেন আমাদের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানমনস্ক, প্রযুক্তিবান্ধব ও মানবিক সৃজনশীল মানুষ হয়, বাংলাদেশ যে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক চেতনা নিয়ে তৈরি হয়েছিলো, সেই চেতনা যেন ধারণ করে শিক্ষার্থীরা বড় হতে পারে তার উপযোগী করেই নতুন শিক্ষাক্রম তৈরি করেছি।
আজ মঙ্গলবার (২ আগস্ট) বিকালে শাহবাগ জাতীয় যাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে শহীদ ডা. আলীম চৌধুরীর সহধর্মিণী শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী লিখিত ও সম্পাদিত এবং মানসী কায়েস ও ফারাহ নাজ অনুদিত DR. ALIM A MARTYR OF 1971 গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে বলে অনেকের কষ্ট হতো। সেই বিচার বাংলাদেশে হয়েছে—কারণ, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে— কারণ, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমাদের মনে হয়, নতুন প্রজন্ম হয়তো মুক্তিযুদ্ধ থেকে দূরে সরে গেছে। তারা নতুন প্রযুক্তি নিয়ে ব্যস্ত। কিন্তু আমাদের সেই ধারণাকে মিথ্যা প্রমাণ করে দিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীরা দেশে ক্ষমতায় থেকে ইতিহাস বিকৃতি করেছে। দেশের বাইরে গিয়েও তাদের সর্বস্ব দিয়ে, অর্থ দিয়ে লবিস্ট নিয়োগ করে ইতিহাস বিকৃত করছে। এর কারণ আমাদের ইতিহাস নিয়ে ইংরেজিতে তেমন কোনও বই নেই।’
শ্যামলী নাসরীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোদাচ্ছের আলী। এছাড়া আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরফুদ্দিন আহমেদ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল, সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দোপাধ্যায়, সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাতিঘর প্রকাশনীর নির্বাহী কর্মকর্তা জাফর আহমেদ রাশেদ ও বইটির অনুবাদক ফারাহ নাজ।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক শারফুদ্দীন আহমেদ বলেন, আল বদর বাহিনীর প্রধান আব্দুল মান্নানের হাতে নিহত হন ডা. আব্দুল আলীম চৌধুরী। মান্নানরা ভেবেছিল যুদ্ধে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা নেই তখন তারা বুদ্ধিজীবীদের খুন করে। যারা একাজে জড়িত ছিল তাদের অনেকের বিচার করতে পেরেছি। কিন্তু আরও অনেকে রয়ে গেছে। তাদের সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
শাহরিয়ার কবির বলেন, দেশে-বিদেশে মুক্তিযুদ্ধের গণহত্যাকে অস্বীকার করার একটি প্রচেষ্টা রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা নিয়ে বাংলায় অনেক লেখা আছে, কিন্তু ইংরেজিতে অনুদিত লেখা খুব বেশি নেই। এমন প্রেক্ষিতে শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী’র এই বইটি বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সংগঠিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এসময় তিনি অতিদ্রুত মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃত ইতিহাস অস্বীকারের বিরুদ্ধে আইন পাস করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
সময়বিডি২৪.কম/শুব্রা রায়